প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যেই আজ শুরু প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগ .....!!!
এই গরমে ক্রিকেট!
তীব্র তাপমাত্রা কমার
সম্ভাবনা আপাতত নেই। দাবদাহ চলবে আরও কয়েক দিন। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস
তা-ই বলছে। প্রচণ্ড গরমে সারা দেশের মানুষেরই যখন হাঁসফাঁস অবস্থা, তখন
কিনা চলছে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ! মাথার ওপর গনগনে সূর্য রেখে দিনভর খেলছেন
ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য মে-জুন যে মোটেই উপযুক্ত
সময় নয়, সেটা এবার হাড়ে-মাংসে টের পাচ্ছেন খেলোয়াড়েরা। দাবদাহ থেকে
সৃষ্টি হচ্ছে পানিশূন্যতা। আর পানিশূন্যতা থেকে টান পড়ছে মাংসপেশিতে,
চিকিৎসাবিদ্যায় যেটিকে বলা হয় ‘ক্র্যাম্প’। প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বের
প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই কোনো না কোনো খেলোয়াড়কে এই চোট নিয়ে মাঠ
ছাড়তে হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্র্যাম্প হচ্ছে পুরো শরীরের
মাংসপেশিতে। খেলোয়াড়দের যেতে হয়েছে হাসপাতাল পর্যন্ত। আজ থেকে শুরু সুপার
লিগে এসব শঙ্কা আরও বেশি করে থাকছে বলে লিগের দুই ভেন্যু বিকেএসপি আর
ফতুল্লায় অ্যাম্বুলেন্স রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বিসিবি।
ভিক্টোরিয়ার ফিজিও মাঈনুল ইসলাম সোহাগ জানিয়েছেন, ‘সব
ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরও দুটি ম্যাচে আমাদের দুজন
খেলোয়াড়ের ক্র্যাম্প হয়েছে, যাদের শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে নিতে হয়েছে।’
মোহামেডানের তামিম ইকবাল কলাবাগানের বিপক্ষে ১৫৭ রানের ইনিংস খেলার পর আর
ফিল্ডিং করতে পারেননি। একই সমস্যায় পড়েছেন এই ক্লাবের সাজিদুল ইসলাম এবং
অভিষেক মিত্রও। অভিষেককে নিয়ে তো অনেক রাত পর্যন্ত হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি
করতে হয়েছে ক্লাব কর্মকর্তাদের।
আবাহনীর ফিজিও খাদেমুল ইসলামকে হাসপাতাল পর্যন্ত যেতে না
হলেও তাঁর অভিজ্ঞতাও সুখকর নয়, ‘১১ ম্যাচের তিন-চারটিতে আমাকে এই সমস্যার
মুখোমুখি হতে হয়েছে। অনেক কিছু থেকেই ক্র্যাম্প হতে পারে। তবে এখন যেটা
হচ্ছে, সেটা তীব্র গরম আর পানিশূন্যতা থেকে।’
দিনের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার প্রভাবে শরীরে কেমন গরম অনুভব
হয়, কানাডার আবহাওয়াবিদেরা সেটি একটি সূচকের মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন।
‘হিউমিডেক্স’ নামের সেই সূচক সারা বিশ্বেই স্বীকৃত। কাল যেমন ঢাকায় দিনের
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সঙ্গে আর্দ্রতাও বেশি (৬৫
থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে) থাকায় শরীরে গরমের অনুভূতি ছিল ৪৬-৪৭ হিউমিডেক্সের
মতো। ‘হিউমিডেক্স রেটিং’ ৪৫-এর ওপরে থাকা মানেই সেই আবহাওয়া বিপজ্জনক,
যাতে হিট স্ট্রোকেরও আশঙ্কা থাকে। ৪০-৪৫ হিউমিডেক্স মানে গরমের অনুভূতি
চূড়ান্ত অস্বস্তিকর, ৩০-৩৯ কিছুটা অস্বস্তিকর এবং ২০-২৯-কে বলা হয়
স্বস্তিদায়ক।
আবহাওয়া যেহেতু আগামী কিছুদিন পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা
নেই, সুপার লিগটা কি তাহলে হিট স্ট্রোকের শঙ্কার মধ্যেই খেলবেন
ক্রিকেটাররা? বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী শঙ্কাটাকে একেবারে উড়িয়ে না
দিলেও বলেছেন, ‘এ রকম গরমের মধ্যে খেলতে হলে খেলোয়াড়দের খেলার আগের দিন
থেকে প্রচুর পানি খেতে হবে। খেলার সময়ও খেতে হবে এবং খেলার পরদিনও খেতে
হবে। অনেকে খেলা চলাকালে এক-দুই চুমুক পানি খেয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করে। কিন্তু
তৃষ্ণা দূর করার পানি খাওয়া আর পানিশূন্যতা থেকে বাঁচার পানি খাওয়া এক নয়।
পানিশূন্যতা এড়াতে শরীরে প্রচুর পানি দরকার।’
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন